খবরা-খবর
‘ভারতীয় সংবিধান, নাগরিকত্ব ও মোদী সরকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সিপিআই(এমএল) সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য

৭ ফেব্রুয়ারী শিলিগুড়িতে রাজ্য কর্মচারীদের অফিস কো-অর্ডিনেশনের সভাঘরে আজকের দেশব্রতী আয়োজিত ‘ভারতীয় সংবিধান, নাগরিকত্ব ও মোদী সরকার’ শীর্ষক আলোচনা সভার শুরুতে দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদারের উপস্থাপনা এবং মীরা চতুর্বেদীর ‘বাঁচার লড়াই প্রতিদিন’ গানটির মধ্য দিয়ে আলোচনার সভার শুরু হয়। আলোচনা সভার মুখ্য আলোচক ছিলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।

মঞ্চে অধ্যাপক অজিত রায়, সঞ্জিবন দত্ত রায় এবং রাজ্য কর্মচারী পেনশনার সমিতির সদস্য অচিন্ত্য সরকারের উপস্থিতিতে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য আলোচনার শুরুতেই এনআরসি-এনপিআর-সিএএ বিরোধী যে বিক্ষোভ আন্দোলন দেশজুড়ে চলছে, শাহিনবাগ থেকে জেএনইউ, আলিগড় থেকে যাদবপুর, পার্কসার্কাসে অবস্থান থেকে রাস্তার লড়াইয়ে ব্যাপক সংখ্যায় ছাত্র যুব মহিলাদের অংশগ্রহণকে দেশের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় বলে অভিহিত করেন। এবং বর্তমান সময় যতই সঙ্কটজনক হোক না কেন ... তার মধ্যেও অনেক ভালো উপাদান এবং রসদ মজুত আছে, যাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর কথা তিনি বলেন।

তিনি বলেন এই মুহূর্তে বিজেপি সরকার বলছেন শাহিনবাগ ইত্যাদি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নাকি দেশে মুঘল সাম্রাজ্য ফিরে আসছে, এবং এই আন্দোলনের নাকি বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের আন্দোলন। এই সব প্রচারের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের চেষ্টা এরা ক্রমাগত চালিয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন হলেও দেশের একটি বড় অংশের মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছে। এনআরসি-এনপিআর-সিএএ এবং ডিটেনশন ক্যাম্প একটা অন্যটার সঙ্গে যুক্ত। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছে। কার্যত মিথ্যে বলে চলেছে। অসমে ডিটেনশন ক্যাম্পে ৩০ জন এখনও অবধি মারা গেছে। অসমের প্রেক্ষাপট যদিও আলাদা ছিল অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশকারী বলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছিল, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর দাবিতে ২০০৩-এ বাজপেয়ী সরকারের সময়েও ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী কথাটি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এবং ২০০৭-০৮ সালে রঞ্জন গগৈই এর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট বাজারের চলতি কথার মতোই একপ্রকার বলে বসেন অসম সহ গোটা দেশটা আবারো নতুন করে বিদেশীদের দখলে চলে যাচ্ছে। আমরা সেসময় এগুলো শুনলেও সেভাবে নজর করিনি। অসমে যখন এনআরসি হল আমরা দেখলাম প্রথম ভাগে প্রায় চল্লিশ লক্ষ এবং দ্বিতীয় ভাগে যেটা ফাইনাল লিস্ট বলা হচ্ছে সেখানে প্রায় সাড়ে বিশ লক্ষ মানুষ বাদ পড়ে গেছেন এনআরসি থেকে। এবং এটা করা হল কোনোও হিন্দু মুসলমান বা জাতপাতের ভিত্তিতে নয়। কাগজ দেখতে চাওয়ার ভিত্তিতে। আমরা অর্থাৎ এই দেশের মানুষদের মাথাতেই ছিল না যে এমনও কোনোদিন আসবে যখন নিজেদেরকে দেশের নাগরিক বলে প্রমাণ দিতে হবে। জব কার্ড না থাকা, ভোটার লিস্টে নাম না থাকা এ নিয়ে মানুষ লড়েছে। ভোটার,আধার, ব্যাংকের বই থাকা মানেই তা নাগরিকত্বের প্রমাণ। কিন্তু এরা বলছে এগুলি দিয়ে হবে না। নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে এগুলি নাকি যথেষ্ট নয়। ১৯৭১ সালের জমি বাড়ির কাগজ দেখাতে হবে।

অসমে দেখা গেল এনআরসি-র পরে যে চৌদ্দ লক্ষ লোক বাদ গেল তাতে বিজেপির প্রচার জোর ধাক্কা খেল কারণ বিজেপি ভেবেছিল যে এর মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র মুসলিম এবং তথাকথিত বাংলাদেশীরাই বাদ যাবে, কিন্তু দেখা গেল পাঁচ লক্ষ মুসলিমের সাথে সাথে পঞ্চাশ হাজার শিখ, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সহ প্রচুর সংখ্যায় বাংলা, হিন্দি, নেপালীভাষী মানুষ গরিব কৃষক শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষ মহিলারাও বাদ গেলেন। বিহারের পরিসংখ্যান ধরতে গেলে অসমে বসবাসকারী ছাপান্নহাজার বিহারের মানুষ এনআরসি–র তালিকা থেকে বাদ গেছে। যার ফলে বহু মানুষ এখন ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি। কারোও হয়ত বাচ্চাটির বাড়িতে বাবা মা ডিটেনশন ক্যাম্পে আছে, কারোও স্বামীর নাম আছে, স্ত্রীর নাম সেই তালিকা থেকে বাদ গেছে। এই অবস্থা সামাল দিতে বিজেপি বলল তারা দেশজুড়ে এনআরসি করবে এবং এতে কেউ বাদ যাবে না কারণ তারা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আসবে, এবং এর মধ্য দিয়ে কেউ যদি এনআরসি, এনপিআর-এর মধ্য দিয়ে বাদ চলে যায়, তাহলেও যারা অ-মুসলিম বিশেষত হিন্দু, তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এই যে বিজেপির প্রচার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-র মাধ্যমে সকলকে ফিরিয়ে আনা হবে, কেউ বাদ যাবেন না বলে যে প্রচার শহর এবং গ্রামে এরা চালাচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। নোটবন্দির সময়ে যেভাবে কালো টাকার নাম করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করার ছুতোয় দিনের পর দিন মানুষকে নান্তানাবুদ করেছে তার ফলশ্রুতি আজ আর কারো অজানা নয়। কোনও টাকাই তো ফেরত আসেনি, অর্থনীতির বেহাল দশা আরোও প্রকট হয়েছে। বেকারত্ব, কৃষিতে সঙ্কট, শ্রমিকদের সংকট আরোও বেড়েছে, জিডিপি কমে গেছে। দেশের সাধারণ মানুষ ক্রমশ আরোও বিপদগ্রস্থ হয়েছে দিন প্রতিদিন। ঠিক সেইভাবেই বর্তমানে দেশে নাকি প্রচুর বাংলাদেশী অবৈধভাবে ঢুকে পড়েছে বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। বর্ডারে বিএসএফ আছে ট্রেনে বাসে ফ্লাইটে চেকিং হচ্ছে। তাহলে কিভাবে বাংলাদেশীরা এই দেশে ঢুকছে? আর যদি কিছু সংখ্যায় ঢুকেও থাকে তাহলে লিস্ট দেওয়া হোক বাংলাদেশকে, জল চুক্তি, জমি চুক্তির মতো চুক্তি হোক। তা তো এরা করছেই না উলটে দিলীপ ঘোষের মতো লোকেরা বলছেন এনআরসি করে এক কোটি বাংলাদেশীকে বের করে দেওয়া হবে, অমিত শাহ-রা এক কোটিতে হবে না দুকোটি এই বলে বাজার গরম করছে এবং মানুষকে আতঙ্কগ্রস্থ করে তুলছে।

বাংলাদেশীদের কিভাবে চিহ্নিত করা হবে? না আগে নাকি কে ভারতীয় সেটা দেখা হবে অর্থাৎ পুরো ব্যাপারটাই উলটে গেল। কিভাবে কে ভারতীয় আর কে নয় তা বোঝা যাবে ? সেজন্য নাকি কাগজ দেখাতে হবে। ১৯৫১ সালের জমির কাগজ, বাড়ির কাগজ। জন্মের সার্টিফিকেট। কিন্তু এখানেই বোঝা দরকার যে একজন গরিব কৃষককে যদি ১৯৫১ সালের কাগজ দেখাতে বলা হয় তাহলে সে কিভাবে দেখাবে ? কারণ ১৯৫৬ সালে ভূমি সংস্কারের ফলে জমিদারী প্রথা বিলোপ হয়। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে ১৯৫৬-র আগের কাগজ জমিদারদের কাছেই থাকবে। এর মধ্য দিয়ে এই সরকার আবারও জমিদারি প্রথা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে যা আরও সাংঘাতিক। আমরা সাধারণভাবেই জানি যে যদি কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নাও থাকে তাহলেও বেশ কিছু মানুষ বিপিএল তালিকা সহ বিভিন্ন তালিকা থেকে বাদ চলে যায়। তাহলে অসমে যদি সাড়ে তিন কোটির মধ্যে উনিশ লক্ষ বাদ যায়, তাহলে একশো ত্রিশ কোটির দেশে নিদেনপক্ষে ছয় সাত কোটি মানুষ খুব সহজেই বাদ চলে যাবে। তারা বেশিরভাগই গরিব ভূমিহীন, পরিযায়ী শ্রমিক, কৃষক সহ বিশেষ সম্প্রদায়ের জিপসি মানুষেরাও আছেন। বিজেপি বলছে যে যারা অ-মুসলিম বিশেষ করে হিন্দু এবং বৌদ্ধ, শিখ, খ্রীষ্টান তারা যদি ২০১৪ সালের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্থান থেকে এদেশে এসে থাকে, এবং তারা যদি অনুপ্রবেশকারীও হয় তাহলেও ছয় বছরের মধ্যে তাদেরকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে। প্রথমে বলা হয়েছিল ধর্মীয় কারণে নিপরিতের প্রমাণ দেখাতে হবে, কিন্তু পরে বলা হল না, শুধু প্রমাণ করলেই হবে যে সে বাংলাদেশ বা পাকিস্তান বা আফগানিস্থান থেকে এসেছেন। অর্থাৎ শুধু কাগজ জোগাড় করা নয় মানুষটি বাংলাদেশ থেকে এসেছে কিনা, পাকিস্তান আফগানিস্থান থেকে এসেছেন কিনা তা প্রমাণের দায়ও তার উপর এসে পড়ল। এবার একটা রাজস্থানের লোক কিভাবে বা কেন প্রমাণ করবে যে সে পাকিস্তান থেকে এসেছে, বা এমপি, ইউপি-র লোক বলবে কেন যে আফগানিস্থান থেকে এসেছে, বিহারের লোক বা পশ্চিমবঙ্গের লোক কেন বলবে সে বাংলাদেশ থেকে এসেছে। অতএব এই যে কেউ বাদ যাবে না বলে যে প্রচার,তা পুরোপুরি মিথ্যা। এনআরসি এবং সিএএ সম্পূর্ণ দুটো আলাদা ব্যবস্থাপনা। এনআরসি দিয়ে যেসব ভারতীয়রা বাদ যাবেন বা ২০১৪-র পরে আসা মানুষ যারা সিএএ দিয়ে ঢুকবেন দুটো কিন্তু আলাদা ব্যাপার। সিএএ নিয়ে ছয় জনের যে কমিটি হয়েছিল তাদের প্রশ্নের উত্তরে সরকার পরিস্কার জানাচ্ছে যে আফগানিস্থান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে আসা মোটে একত্রিশ হাজার তিনশো তেরো হাজার মানুষই কেবল নাগরিকত্ব পাবেন যাদের লংটার্ম ভিসা আছে তারা সেটা সিটিজেনশিপে বদলে নিতে পারবেন। নির্মলা সীতারামন এটাও দাবি করেছেন যে বাংলাদেশ, আফগানিস্থান, পাকিস্তান থেকে আসা চার হাজার মানুষকে ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে বিগত পাঁচ বছরের শাসনকালে। তাহলে পুরোনো আইনেই নাগরিকত্ব দেওয়া যাচ্ছিল। তাহলে আইন বদলের দরকার কি ছিল? এর আগেও পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, তামিলনাড়ু, অসমে যারা বাংলাদেশ, আফগানিস্থান সহ বিভিন্ন জায়গার থেকে এসেছে সেইসব শরণার্থীদের জন্য কমিউনিস্টরা লড়েছে ভোটার কার্ডে নাম তোলা, রেশন কার্ড, জব কার্ড, কাস্ট সার্টিফিকেট বেশিরভাগ মানুষ পেয়েছে, তাই সংখ্যাটি কমে দাঁড়িয়েছে একত্রিশ হাজার তিনশো তেরো জন। কিন্তু শুধু অসমেই যদি উনিশ লক্ষ বাদ হয়ে থাকে তাহলে তা গোটা দেশের নিরিখে দাঁড়াবে অবশ্যই ছয় থেকে সাত কোটি।

db

 

পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এর বিপদ আরোও মারাত্বক। কৈলাস বিজয় বর্গীয় যিনি বিজেপির নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গে যাকে ইনচার্জ করে পাঠানো হয়েছে তিনি বললেন তার বাড়িতে যারা কাজ করছেন তাদেরকে চিড়ে খেতে দেখে নাকি তিনি বুঝতে পেরেছেন তারা বাংলাদেশী। আবার অন্য দিকে মোদী বলে চলেছেন এখনও অবধি এনআরসি র কথা ভাবা হচ্ছে না। তবে এনপিআর হবে, এনপিআর হচ্ছে। এটা আরো মারাত্মক। এনআরসি-তে তো শুধুমাত্র কাগজ দেখতে চাওয়া হয়েছে, এনপিআর-এর ক্ষেত্রে সন্দেহ হলেই আপনার নামের পাশে ‘ডি’ অর্থাৎ ডাউটফুল বসে যেতে পারে। আপনি নিজের অজান্তেই সন্দেহের তালিকায় ঢুকে যেতে পারেন। টাগেট হয়ে যেতে পারেন। আর এই ক্ষেত্রে বিরোধী মতের মানুষ, গ্রামে যারা একটু কথা বলেন, দাবি দাওয়া আদায়ে সামনে থাকেন প্রগতিশীল মানুষ থেকে সাধারণ কৃষকরাই টার্গেট। এনপিআর কে এনআরসি এ প্রস্তুতি পর্ব বলাই যায়। এর বিরুদ্ধে যে আন্দোলনের দানা বেঁধেছে তা সত্যি উল্লেখযোগ্য কিছু কিছু বিধানসভায় এনআরসি, এনপিআর বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়েছে এটা আশার খবর। কিন্তু চলমান আন্দোলনের উপর নেমে আসছে পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। এই যে এনআরসি, এনপিআর, সিএএ এবং ডিটেনশন ক্যাম্প সবমিলিয়ে একটা প্রজেক্ট—এর মধ্যে দিয়ে দেশের সংবিধানকে পালটে দেওয়া বা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় যখন লক্ষীবাঈ-মঙ্গলপাণ্ডেরা লড়ছেন, সেসময় আজিবুল্লা খানের লেখা একটি গান ‘হাম হে ইসকে মালিক, হিন্দুস্তাঁ হামারা’ গানটি গাওয়া হয়েছিল। সেটাই কিন্তু সংবিধানেরও মূল কথা ‘উই দ্য পিপল অফ ইন্ডিয়া’ ... এই দেশ আমাদের, আমরা এই দেশের মালিক। কিন্তু এই এনআরসি, এনপিআর, সিএএ-র মাধ্যমে সরকার এটাই ভুলিয়ে দিতে চাইছে। তারা বলতে চাইছে জনগণের ইচ্ছেতে নয় সরকার নয়; সরকারের ইচ্ছেতে জনগণ চলবে। পার্লামেন্ট থেকে রাম মন্দির নিয়ে ট্রাষ্ট তৈরি হচ্ছে। যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদেরকে দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে। বাংলা সহ গোটা দেশ এই মুহূর্তে কার্যত প্রায় ভাঙ্গনের মুখে দাঁড়িয়ে। ১৯০৫ সালে প্রথমবারের জন্য বাংলা ভাগ রোখা গেছিল। আবার সেই সময় এসেছে যখন একত্রিতভাবে নতুন করে সেই ভাঙনকে রুখতে হবে। সরকার এবং একটি অংশের মানুষ বলতে শুরু করেছেন যে আন্দোলন চলছে তা নাকি মুসলিমদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এই ব্যাপারটি যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তা প্রমাণ করতে পাঞ্জাবের কৃষকেরা যেমন শাহিনবাগের আন্দোলনরত মহিলাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন, ঠিক সেইভাবেই ছাত্র-যুব থেকে সরকারী কর্মচারি সবারই পার্ক সার্কাসের অবস্থান আন্দোলনের পাশেও থাকা উচিৎ। গ্রামেও প্রচার অভিযান চালানো উচিত। আমাদের সেই সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, চেতনা আছে। কমিউনিষ্টরা তো বলেনই যেখানে অন্যায়, সেখানেই প্রতিরোধ। তাই দিন প্রতিদিন যেভাবে ঘটনা বাড়ছে মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলোনই তার একমাত্র জবাব হতে পারে।

খণ্ড-27
সংখ্যা-3