সিরিয়া সীমান্তে তুরষ্কের হামলায় ক্ষোভ বিশ্বজুড়ে

অশান্ত পশ্চিম এশিয়া ও সিরিয়াতে নতুন করে ঘনিয়ে উঠেছে সঙ্কট। সঙ্কটের পেছনে আছে তুরষ্কের স্বৈরতন্ত্রী শাসক এরদোগানের নেতৃত্বে সিরিয়ার অভ্যন্তরে তুরষ্কের সেনা হামলা। এরদোগান মুখে বলেছেন তার উদ্দেশ্য সিরিয়া ও তুরষ্কের সীমান্তের মধ্যে একটি নিরাপদ অঞ্চল সৃষ্টি করা, যেখানে গৃহযুদ্ধের আতঙ্কে সিরিয়া থেকে তুরষ্কে ঢুকে পড়া উদ্বাস্তুদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

গৃহযুদ্ধ আক্রান্ত সিরিয়ার উত্তরাংশের নিয়ন্ত্রণ এখন মূলত রয়েছে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স নামক কুর্দ বাহিনীর হাতে। তারা দীর্ঘদিন ধরেই একটি স্বাধীন কুর্দিস্থানের জন্য রাজনৈতিক ও সামরিক লড়াইয়ে অবতীর্ণ। কুর্দিস্থান ওয়ার্কাস পার্টি সহ বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন এই লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছে এবং তারাই ইসলামিক স্টেট এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম প্রধান শক্তি।

ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য এই মুহূর্তকে বেছে নিয়ে কার্যত স্বৈরতন্ত্রী এরদোগানের সিরিয়ার ওপর হামলাকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। তবে ইউরোপের বিভিন্ন শক্তি এমনকী ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত শক্তিসমূহও তুরষ্কের এই হামলার নিন্দা করেছে। এসডিএফ-এর সাথে তুরষ্কের আলোচনার যে প্রস্তাব এই মহল থেকে এসেছে, এরদোগান দ্রুত তাকে খারিজ করে আক্রমণ ক্রমশ তীব্র করছেন।

এক সপ্তাহের এই যুদ্ধে এর মধ্যেই নতুন করে দেড় লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন। অন্তত ষাটজন অসামারিক মানুষ এর মধ্যেই মৃত বা অতি গুরুতরভাবে আহত। সংখ্যাগুলি উদ্বেগজনকভাবে প্রতিদিন বাড়ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যাচ্ছে তুরষ্কর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিরিয়া সরকারের সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিদ্রোহী শক্তি সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্স-এর একটি বোঝাপড়া হয়েছে। সেই বোঝাপড়ার পরিপ্রেক্ষিতে তুরষ্কের হামলাকে এই দুই এতাবৎ বিবদমান শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবে। সিরিয়ার সরকার সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সকে সাহায্য করার জন্য ইতোমধ্যেই তাদের সেনা পাঠিয়েছে দেশের উত্তরাঞ্জলে।

বিশ্বের সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তির দাবি – তুরষ্কের সেনা অবিলম্বে সিরিয়া থেকে হাত ওঠাও এবং যুদ্ধ বন্ধ করে আলাপ আলোচনা শুরু কর।

খণ্ড-26
সংখ্যা-32