খবরা-খবর
আবার বন্ধ কারখানার শ্রমিক আত্মঘাতী

গত ২৫ আগস্ট গোঁদলপাড়া জুট মিলের শ্রমিক বিশ্বজিৎ দে আত্মঘাতী হন। ২০১৮ সালের ২৮ মে থেকে মিলটি বন্ধ, লোকসভা নির্বাচনের আগে কয়েকদিনের জন্য মিলটি খুললেও নির্বাচনের অব্যবহিত পরেই মালিক আবার সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকার দরুন শ্রমিক পরিবারগুলিতে অভাব অনটন নেমে এসেছে। এই অসহনীয় পরিস্থিতি বাধ্য করেছে যুবক শ্রমিকটিকে আত্মহত্যা করতে। বিশ্বজিৎ- এর বাড়িতে রয়েছে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া একমাত্র মেয়ে। ২৬ আগস্ট সিপিআই(এমএল)-এর হুগলী জেলা সম্পাদক প্রবীর হালদার, এআইসিসিটিইউ জেলা সম্পাদক বটকৃষ্ণ দাস সহ এক প্রতিনিধি দল আত্মঘাতী শ্রমিক বিশ্বজিৎ দে-র পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। বিশ্বজিৎ-এর মা সমেত সকলেই এখন তার শ্বশুর বাড়িতে রয়েছে। প্রতিনিধিদল সেই বাড়িতে গিয়েই স্ত্রী এবং শাশুড়ির সঙ্গে কথা বলে। সারাক্ষণ বাবার জন্য কেঁদে চলা মেয়েটিকে কিছুক্ষণের জন্য অন্যত্র নিয়ে যাবার কারণে তার সঙ্গে দেখা হয়নি। অসহায় পরিবারের মানুষগুলি বারবার তাদের পাশে থাকা, তাদের জন্য কিছু করার আর্তি জানাচ্ছিল। ঐ স্থানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ পরের দিনই শ্রম দপ্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচীর সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত মতো ২৭ আগস্ট চন্দননগর ডেপুটি লেবার কমিশনারের সামনে এআইসিসিট ইউ এবং বিসিএমএফের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হয় এবং ডিএলসি-কে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রম কমিশনারের কাছে অবিলম্বে গোঁদলপাড়া জুট মিল সহ সমস্ত বন্ধ জুট মিল খোলা, সরকারী উদাসীনতার শিকার মৃতের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, পিএফ সহ সমস্ত আইনগত ভাবে প্রাপ্য দ্রুত প্রদানে শ্রম দপ্তরকে দায়িত্ব নেওয়া, সরকারের পরিবারের চাকরির ব্যবস্থা করা, ফাউলাউ প্রকল্পে ভাতার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০০০ টাকা করার দাবি জানানো হয়। বক্তব্য রাখেন জুটের নেতা সুদর্শন প্রসাদ সিং সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

ইতিমধ্যে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ মৃতের পরিবারের সাথে দেখা করে। কিন্তু যে বিজেপির শ্রমনীতি সারা দেশ জুড়েই শ্রমিকদের জন্য নিয়ে এসেছে দুর্দশা, অনাহার ও মৃত্যু সেই দল বা তার নেতা নেত্রীদের মৃত শ্রমিকের পরিবারকে দেওয়া যে কোনো প্রতিশ্রুতি এক নির্লজ্জ মিথ্যাচার।

খণ্ড-26
সংখ্যা-27