বিবৃতি
কঙ্গনা রানাওতের পদ্মশ্রী প্রত্যাহার কর!
Kangana Ranaut

পদ্মশ্রী পুরস্কার পাওয়ার পরপরই, অভিনেত্রী এবং বিজেপি-পন্থী পরিচিত মুখ কঙ্গনা রানাওত ঘোষণা করলেন যে ১৯৪৭ সালে দেশ যা পেয়েছিল সেটা নিছক ভিক্ষা ছিল এবং সেই স্বাধীনতা প্রকৃত রূপে অর্জিত হয়েছিল ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথে। টাইমস নাউ (মোদী সরকারের স্বার্থে নিবেদিত টিভি চ্যানেলগুলির মধ্যে একটি) আয়োজিত একটি আলোচনাসভায় তিনি এই বিবৃতি দিয়েছেন।

কঙ্গনা রানাওতের বিবৃতি, বেদনাদায়ক হলেও আসলে তা স্বাধীনতা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে, স্বাধীনতার ঠিক পরে পরেই এবং তারপর থেকে আরএসএস’এর ব্যক্ত অনুভূতির সাথে অনেকটাই সঙ্গতিপূর্ণ। আরএসএস’এর প্রতিষ্ঠাতা মতাদর্শী গোলওয়ালকর ঘোষণা করেছিলেন যে স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদরা ‘ব্যর্থ’ এবং তাদের আদর্শ হিসাবে শ্রদ্ধা করার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি আরও বলেছিলেন যে স্বাধীনতা সংগ্রামের যে ব্রিটিশ বিরোধী অভিমুখ তা ছিল ‘বিপর্যয়কর’। আরএসএস ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা এবং সংবিধানের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করেছিল, এবং জানিয়েছিল তারা জাতীয় পতাকা হিসেবে কেবল গেরুয়া পতাকা এবং সংবিধান হিসেবে মনুস্মৃতি গ্রহণ করার পক্ষপাতী।

কঙ্গনা রানাওতের মনে হয়েছে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি একটা হেলাফেলার মতো বিষয়। তাঁর কাছে স্বাধীনতার অর্থ কাউকে সংগঠিত গণপ্রহারে হত্যা করার স্বাধীনতা, ধর্মান্ধতা এবং অজ্ঞেয়বাদ প্রকাশ ও প্রচারের স্বাধীনতা তথা সমগ্র ভারতে আরএসএস’এর মতাদর্শ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, ধর্ম এবং আচরণকে জবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়ার স্বাধীনতা।

কঙ্গনা রানাওতকে দেওয়া পদ্মশ্রী সরকারকে প্রত্যাহার করতেই হবে। একদিকে সরকার স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ উদযাপন করবে আর অন্যদিকে যারা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতাকে অপমান করে তাদের সম্বর্ধনা ও সম্মান জানাবে, এই দুটো বিষয় একসাথে চলতে পারে না।

- দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন

খণ্ড-28
সংখ্যা-40