বিবৃতি
কোচবিহারের সিতাইয়ে বিএসএফ’এর গুলিচালনা ও ৩ জন গ্রামবাসীর হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই
3 villagers in Sitai, Cochbihar

বিএসএফ’এর অধিক্ষেত্র সম্প্রসারণের নির্দেশনামা প্রত্যাহার করতে হবে

১১ নভেম্বর কোচবিহার জেলার সিতাইয়ের বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফ জওয়ানরা গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ৩ জন গ্রামবাসীকে। নিহত ব্যক্তিদের অপরাধ কি ছিল, সে বিষয়ে বিএসএফ আধিকারিকেরা নিশ্চুপ। তারপর যথারীতি নিহত মানুষজন ‘চোরাচালানকারী’ বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। কিন্তু হত্যা করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মোতায়েন বিএসএফ জওয়ানদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী অসহায় গ্রামবাসীদের ওপর নিরন্তর অত্যাচার, হত্যা, মহিলাদের ধর্ষনের ঘটনাগুলি বারংবার ঘটে চলেছে, অথচ কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনো হেলদোল চোখে পড়েনা। উপরন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের নতুন নির্দেশনামায় বিএসএফ’এর অধিক্ষেত্র ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার মধ্য দিয়ে এই খুনে বাহিনীকে রাজ্যের অভ্যন্তরে সামান্য সন্দেহের বশে যে কোনো নাগরিকের তল্লাসী নেওয়া, জিনিষপত্র বাজেয়াপ্ত করা, এমনকি গ্রেপ্তার করার অবাধ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফলত এই বাড়তি অধিকারের বলে কেন্দ্রের মোদী সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখল করতে না পেরে পেছন দরজা দিয়ে একটি সমান্তরাল পুলিশী রাজ কায়েম করতে চাইছে। কিছুদিন আগে বিএসএফ’এর আধিকারিকদের সাথে বিজেপি’র বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিদের বৈঠক যথেষ্ট সন্দেহজনক।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় কুমার ভাল্লা আজ সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়গুলি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের ডিজি ও সীমান্তবর্তী জেলাগুলির পুলিশ প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করতে কলকাতায় এসেছেন। বিএসএফ কর্তৃক সিতাই গণহত্যার দায় স্বীকার করে শ্রী ভাল্লাকে বাংলার জনসাধারণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে এবং বিএসএফ’এর অধিক্ষেত্র সম্প্রসারণের আদেশনামা প্রত্যাহার করতে হবে।

আমরা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। হত্যাকান্ডে অপরাধী বিএসএফ জওয়ান ও আধিকারিকদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

গত ১২ নভেম্বর এক প্রেস বিবৃতিতে এই বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার।

খণ্ড-28
সংখ্যা-40