শোক সংবাদ
প্রবীণ কমিউনিস্ট কর্মীর জীবনাবসান
Death of a veteran communist activist

গত ৯ নভেম্বর পুর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকের আটাশপুর গ্রামে নিজের বাড়ীতে কমরেড তিনকড়ি ভট্টাচার্য প্রয়াত হন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। কিছুদিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন। রেখে গেলেন স্ত্রী, দুই পুত্র ও পরিবারের অন্যান্য লোকজনদের। যুবক বয়স থেকেই কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি ভাল স্টেনোগ্রাফার ছিলেন। চাকরি ছেড়ে গ্রামে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করার জন্য পুর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকের গ্রামাঞ্চলে সর্বক্ষণের কর্মী হয়ে সংগঠন গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭২ সালের শ্বেত সন্ত্রাস ও কংগ্রেসের মস্তানদের অত্যাচারে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। আবার চাকরিতে যুক্ত হতে বাধ্য হন। ১৯৭৭ সালের পর আবার চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামাঞ্চলে পার্টির কাজে যুক্ত হন। সর্বক্ষণের কর্মী হয়ে মন্তেশ্বর ব্লকের কৃষকদের সংগঠিত করে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে থাকেন। এলাকার কৃষক সভার ও পার্টির দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে থাকেন। মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্ত অল্পদিনের মধ্যেই সিপিআই(এম) নেতাদের দুর্নীতি, দলবাজী ও আমলাতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদ করতে গিয়েই ঐ দল ছাড়তে বাধ্য হন। ১৯৯৩ সালের করন্দার গণহত্যার পর বর্ধমান জেলাজুড়ে সিপিআই(এম) তথা বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে ব্যাপক বাম-গণতান্ত্রিক মানুষের প্রতিবাদ বিক্ষোভের প্রভাবে কমরেড তিনকড়ি ভট্টাচার্য সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তারপর থেকে মন্তেশ্বর ব্লকে পার্টির কাজে আত্মনিয়োগ করেন। সারা ভারত কিষাণ মহাসভার পুর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতির দায়িত্ব নেন। পার্টির বিভিন্ন জেলা সম্মেলন ও রাজ্য সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেন। বয়সের ভারকে উপেক্ষা করেই মন্তেশ্বর বিধানসভার উপনির্বাচনের প্রচারে কমরেড অংশগ্রহণ করেছেন। এইভাবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পার্টির সদস্য ছিলেন এবং লাল পতাকাকে উর্দ্ধে তুলে ধরে রাখতেন। পার্টির পুর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি কমরেড তিনকড়ি ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে। এই আজীবন বামপন্থী কর্মীর সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে ফ্যাসিবাদের মোকাবিলায় সমস্ত কমরেডদের লাল পতাকাকে ঊর্ধ্বে তুলে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান রাখছে। কমরেড তিনকড়ি ভট্টাচার্য লালসেলাম। তাঁর স্মৃতি অবিনশ্বর হোক।

খণ্ড-28
সংখ্যা-40