কোভিডে উপার্জন কম, স্কুলে ভর্তিতে না
Covid's earnings are low

‘বার্ষিক শিক্ষাব্যবস্থা রিপোর্ট ২০২১’ থেকে দেখা যাচ্ছে ৬ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে বেসরকারী স্কুলে ভর্তির হার ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

২০১৮ সাল থেকে বেসরকারী স্কুলে ভর্তির হার দ্রুত কমেছে এবং অ-অনুমোদিত স্কুলে শিশুদের অনুপাত প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এই প্রবণতার জন্য দায়ী প্রধাণত পরিবারের আয়ের উপর মহামারীর প্রভাব৷

‘প্রথম’ এনজিও (NGO) দ্বারা ‘বার্ষিক শিক্ষাব্যবস্থা রিপোর্ট ২০২১’ (Annual Status of Education Report), সম্প্রতি প্রকাশিত হয়। রিপোর্ট বলছে, সরকারি স্কুলে ভর্তির হার ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভর্তি না হওয়া শিশুদের অনুপাত হয়েছে ২.৫ থেকে ৪.৬ শতাংশ। এই সময় সরকারি স্কুলে ভর্তি হওয়া মেয়েদের অনুপাত ছেলেদের তুলনায় বেশি ছিল।

কোভিডের আগে এবং পরে উভয়ক্ষেত্রেই, ৫৮১টি জেলার ৭৫,০০০টিরও বেশি পরিবারের মধ্যে টেলিফোন সমীক্ষার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি হয়।

প্রথমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুক্মিণী ব্যানার্জি বলেছেন যে ফোন সমীক্ষাটি ২০১৮ সালে ঘরে ঘরে সমীক্ষার যে নমুনার ৯০ শতাংশ কভার করেছিল।

২০১৮ সালে দেখা গেছিলো প্রায় ১০ শতাংশ পরিবারের কাছে টেলিফোন নেই। সুতরাং, সেসময় তাদের এই সমীক্ষায় কভার করা যায়নি। রিপোর্ট বলেছে, তাদের কভার করা হলে অবস্থাটা আরও খারাপ দেখাতো, কারণ এই পরিবারগুলি আরও দরিদ্র।

পরিবারের আর্থিক সমস্যাগুলি ছাড়াও, সরকারি স্কুলে নথিভুক্তি বাড়ার প্রবণতার কারণগুলি হল, সরকারি স্কুলে দেওয়া প্রণোদনা এবং কিছু রাজ্য সরকার কর্তৃক ইংরেজি-মাধ্যম স্কুল খোলা। সরকারি স্কুলগুলি বিনামূল্যে ইউনিফর্ম এবং পাঠ্যপুস্তকের মতো প্রণোদনা প্রদান করে — এমনকি কিছু রাজ্যে বিনামূল্যে সাইকেল এবং গ্যাজেট (যেমন ট্যাবলেট) দেয় ছাত্রছাত্রীদের।

রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ২০০৬ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বেসরকারী স্কুলে ভর্তির হার দ্রুত বেড়ে ৩০ শতাংশে পৌঁছেছিলো। এই সময় কম খরচের প্রাইভেট স্কুলগুলির বৃদ্ধির কারণ অর্থনীতির উন্নতি, জীবনধারার পরিবর্তন এবং সন্তানদের জন্য পিতামাতার আকাঙ্ক্ষা।

অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত লোকেরা মহামারী দ্বারা অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদের বেশিরভাগই তাদের বাচ্চাদের কম খরচের প্রাইভেট স্কুলে পাঠায়, যারমধ্যে অনেকগুলি গত দু’বছরে বন্ধ হয়ে গেছে। এসবই সরকারি স্কুলে ইতিবাচক প্রভাব এনে দিয়েছে। এখন চ্যালেঞ্জ এই শিশুদের ধরে রাখা। সরকারি স্কুলগুলিকে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করতে হবে এবং কার্যকর শিক্ষার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা দিতে হবে।

স্কুল বন্ধের কারণে, ২০১৮ সালে ৩০ শতাংশ থেকে, প্রাইভেট টিউশন নেওয়া শিশুদের অনুপাত ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্মার্টফোনের লভ্যতা ২০১৮ সালে ৩৬.৫ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৬৭.৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, স্কুলগুলি অনলাইন শিক্ষার আশ্রয় নিয়েছে৷ প্রায় ৭৯ শতাংশ প্রাইভেট স্কুল ছাত্রদের বাড়িতে একটি স্মার্টফোন রয়েছে, যেখানে সরকারি স্কুল ছাত্রদের বাড়িতে রয়েছে ৬৩.৭ শতাংশ।

বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে শেখার সহায়তা পাওয়া স্কুলছাত্রীদের অনুপাত ২০২০ সালে ৭৫ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

সরকারি স্কুলে ভর্তির সামগ্রিক বৃদ্ধি উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরালা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে বেশি হয়েছে৷

- দি টেলিগ্রাফ, ২০ নভেম্বর ২০২১

খণ্ড-28
সংখ্যা-41