সিপিআই(এমএল) ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক পার্থ কর্মকার ৮ নভেম্বর ২০২০ একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর সংঘবদ্ধ আক্রমণের মূল উস্কানিদাতা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক লঘু ধারায় মামলা গ্রহণ ও তাদের গ্রেপ্তার করা লোক দেখানো নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়। মুখ্যমন্ত্রীকে এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
গতকাল ৭ নভেম্বর ২০২০ শনিবার উদয়পুর রাজারবাগ বাসস্ট্যান্ডে ‘প্রতিবাদী কলম’ পত্রিকার বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে নষ্ট করে দেয় একদল বিজেপি আশ্রিত সমাজবিরোধী। করোনা অতিমারীতে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় গত ১১ সেপ্টেম্বর সাব্রুমে মুখ্যমন্ত্রী কর্তৃক কার্যত রাজ্যের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি এর পিছনে পরোক্ষভাবে দায়ী। তার হুমকির চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই সাংবাদিক পরাশর বিশ্বাসরা দৈহিকভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী আজও তার অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি। সম্প্রতি কৃষিদপ্তর ও তার মন্ত্রীকে জড়িয়ে দেড়শো কোটি টাকার দুর্নীতির খবর প্রতিবাদী কলমে প্রকাশিত হয়। একে কেন্দ্র করেই এই হামলা। কারণ প্রকাশিত খবর অসত্য বা অন্য কোন খারাপ উদ্দেশ্যে হলে প্রচলিত আইনের বিধান রয়েছে প্রতিকার চাওয়ার ও পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের। কিন্তু সেইপথে না গিয়ে সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে ও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে আগের দিন উদয়পুর শহরে শাসক দল যুবকদের মিছিল সংগঠিত করে। ঠিক পরদিন সকালে এই হামলা সংগঠিত হয়। আর এখন প্রমাণিত এই হামলাকারী সবাই শাসক দলের নেতা ও কর্মী। এদিকে ৮ নভেম্বর রাজ্য প্রেস ক্লাবের নির্বাচন। তাই সরকার চাপে পড়ে যায়। আরকেপুর থানার পুলিশ অত্যন্ত লঘু ধারায় লোক দেখানো মামলায় অভিযুক্তদের অনেক দেরীতে গ্রেপ্তার করে একপ্রস্থ নাটক মঞ্চস্থ করে। যাতে করে সমাজবিরোধীরাই উৎসাহিত হবে, তাদের মনোবল বাড়বে। আর মুখ্যমন্ত্রীই সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের উপর এই হামলা ও প্রতিটি হামলার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে এর জন্য রাজ্যবাসীর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। ক্ষমা চাইতে হবে। আজ রাজ্যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিপন্ন। সংবিধান, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র অস্তিত্ব নেই। রাজ্যে সংবিধান, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান করছে সিপিআই(এমএল), ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি।