গত ১০ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে চলে গেলেন ধনেখালিতে সিপিআই(এমএল) লিবারেশানের দরদী হয়ে ওঠা কমরেড সুনীলাক্ষ বসু। চিকিৎসার কারণে তিনি এইসময় একমাত্র কন্যার যাদবপুরের বাড়িতে ছিলেন। গত শতকের সাতের দশক থেকে শুরু করে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বের ঠিক পূর্ব পর্যন্ত ধনেখালি সিপিএমের অন্যতম প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন কমরেড। এই শতকের শুরুতেই সিপিএমের ধনেখালি জোনাল কমিটি আড়াআড়ি ভেঙ্গে যায়। সুনীলাক্ষর নেতৃত্বে ধনেখালি জোনাল কমিটির বেশিরভাগ সদস্য পার্টি থেকে বেরিয়ে আসেন। জোনাল নেতৃত্বের এই দলত্যাগী অংশের বেশিরভাগ নেতা নিস্ক্রীয় হয়ে যান। ব্যতিক্রম থাকেন কমরেড বসু। তিনি আমাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। দেশব্রতী, লিবারেশন পড়তেন। কমরেড পার্থ ঘোষের সাথে একটি বৈঠকেও মিলিত হন। কমরেড কার্তিক পালের সাথেও পরিচিত ছিলেন। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম ঘটনা প্রবাহের সময় তাঁর ঐকান্তিক সহযোগিতায় মূলত বেলমুড়ি, দাদপুর ও মাকালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সিপিএম প্রভাবিত জনগণের এক ভালো অংশ সিপিআই(এমএল) লিবারেশানে যোগদান করেন। এভাবে সিপিআই(এমএল) বিশেষত বেলমুড়ি অঞ্চলে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়। তারপর রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর শাসক দলের লাগাতার তীব্র দমন পীড়নের মুখে ঐ জনতা ধীরে ধীরে পার্টির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। সক্রিয়তা নিয়ে থেকে যান কমরেড মহাদেব মুর্মু, ফকির সরেনদের মতো সাথীরা।
কমরেড বসু সিপিআই(এমএল)-এর সদস্যপদ গ্রহণ না করলেও পার্টির খোঁজ নিয়মিত রাখতেন। দিন সাতেক আগে ফোনে জানান কয়েকদিনের মধ্যেই ধনেখালি ফিরতে চান। পার্টির সহায়তা চান।
সেই তিনি ফিরলেন – তবে শেষ যাত্রায়।
আজ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বেলমুড়ির বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশানের মহাদেব মুর্মু, সজল দে, জয়দেব বাগ, সজল অধিকারী প্রমুখ।
লাল সেলাম কমরেড সুনীলাক্ষ বসু।