লকডাউনে কিছু অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি
llo

দেশে ২ মাসের বেশি সময় ধরে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন চলছে। লকডাউনের দ্বিতীয় পর্ব থেকেই শহর হাওড়া সহ বেশকিছু এলাকায় রেড জোন ঘোষণা হয়েছে। জেলা হাসপাতাল সহ কয়েকটি হাসপাতালের ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হন। এর মধ্যেই সারা ভারত প্রগতিশীল মহিলা সমিতির রাজ‍্য কমিটির নেওয়া কর্মসূচীগুলি হাওড়া জেলাতেও যথাসাধ্য পালন করা হয়। করোনা অতিমারী ও লকডাউনের  ফলে গ্রামীণ এলাকার গরিব ও মেহনতি মানুষের কাজ নেই, চলছে চরম আর্থিক সংকট। মহিলা সমিতির বেশিরভাগ সদস্যই শ্রমজীবী। গ্রামীণ এলাকার এই মহিলারা, মিড ডে মিল ও অঙ্গনওয়ারী কর্মীরা, আশা কর্মীরা নিজেদের সাধ্যমত এই সংকটগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করেছেন ও বিপন্ন  মানুষদের তা বিলি করেন।

স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে আশা কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নিজেদের কাজ করে যাচ্ছেন। তারা সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডিউটি করছেন। বিভিন্ন গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়িতে যেতে হচ্ছে। এই কাজে যথেষ্ট ঝুঁকি আছে। কোথাও কোথাও তাদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। এর মধ্যে কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রেও তাদের ডিউটি দিতে হয় এবং তা দিনে বা রাতে ১২ ঘণ্টা করে। আশা কর্মীরা এত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন, অথচ তাদের সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত সরঞ্জামের ব্যবস্থা নেই। ডিউটি করে যাওয়ার পাশাপাশি আশা কর্মীরা সুরক্ষা সরঞ্জাম ও অন্যান্য কিছু আর্থিক দাবি, যেমন অতিরিক্ত ভাতা ইত‍্যাদি নিয়ে বিডিও-র কাছে ডেপুটেশন দিয়েছেন। দাবি ছিল স্বাস্থ্য ব‍্যবস্থার উন্নয়নের জন্যও।

এর মধ্যেই সরকার মদের দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের কী লাভ হল জানি না, কিন্তু সরকারের রাজকোষে বেশ কিছু টাকা জমা পড়েছে। আর মদ কেনার টাকার জন্য গরিব ঘরের স্ত্রী ও মায়েদের ওপর অত‍্যাচার আবার শুরু হল। দু-একটা গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনার ক্ষেত্রে এই অত‍্যাচারের বিরুদ্ধে মহিলা সমিতি হস্তক্ষেপ করে ও তা বন্ধ করে।

এর মধ্যে আমফান সুপার সাইক্লোন গোটা দক্ষিণ বঙ্গকে তছনছ করে দিয়ে গেছে। হাওড়া জেলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মহিলা সমিতির সদস্যরা করোনার পাশাপাশি ঝড়বিধ্বস্ত অঞ্চলের বিপন্ন মানুষদের পাশে সাধ্যমত দাঁড়ানোর পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিতে চলেছেন।

-- কল্যাণী গোস্বামী 

খণ্ড-27