খবরা-খবর
পূর্ব বর্ধমান জেলায় গণডেপুটেশন

নানা দাবি নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন ব্লকে আয়ারলা এবং সিপিআই(এমএল)-এর নেতৃত্বে গণডেপুটেশন দেওয়া হয়। প্রতিটি ডেপুটেশনেই বিভিন্ন গ্রামের কয়েক শত মানুষ অংশগ্রহন করেন। প্রথম ডেপুটেশনটি দেওয়া হয় ৩১ আগস্ট মন্তেশ্বর ব্লকে, দ্বিতীয়টি ৬ সেপ্টেম্বর কালনা ২নং ব্লকে এবং তৃতীয় ডেপুটেশনটি দেওয়া হয় ১২ সেপ্টেম্বর পূর্বস্থলি ২নং ব্লকে। যে দাবিগুলিকে তুলে ধরে ডেপুটেশন দেওয়া সেগুলি হল—১০০ দিনের কাজ সহ সমস্ত সরকারি কাজে ন্যূনতম মজুরি চালু করতে হবে; প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে দুর্নীতি ও দলবাজি বন্ধ করতে হবে; খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে মাসে মাথাপিছু ১০ কেজি করে খাদ্য শস্য দিতে হবে।

গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পে কাজ দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি ও দলবাজি প্রকট হয়ে উঠেছে। ভুয়ো মাস্টার রোল তৈরি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তৃণমূলের সমর্থক লোকজনদের কাজ দেওয়া হচ্ছে, আর কাজে ন্যূনতম মজুরিও দেওয়া হচ্ছে না। বহু মানুষ ৪(ক) ফর্ম জমা দিয়ে কাজের আবেদন জানালেও তাদের কাজ দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে যে তালিকা তৈরি হচ্ছে, তৃণমূল নেতারা তাতে নিজেদের নাম ঢোকাচ্ছেন, কোন কোন পাকা বাড়ির মালিক গোয়াল ঘর বা রান্না ঘর দেখিয়ে ঘর পাওয়ার যোগ্য বলে নিজেদের দাবি করছেন এবং তালিকায় ঢুকে পড়ছেন। কারা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য সে নিয়ে সার্ভে করার কথা বলা হলেও যথার্থ যোগ্য ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার মত কোন সার্ভে হচ্ছে না। আবার ঘর পাওয়ার সময় তৃণমূল নেতাদের টাকা দিতে হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

বিডিও-দের কাছে এই সমস্ত দাবি তুলে ধরা হলে কোন বিডিও দলবাজির কথা স্বীকার এবং নিজের অসহায়তার কথা প্রকাশ করেন। কোন বিডিও আবার জেলা শাসকের নির্দেশ নেই বলে বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যাই হোক, ১০০ দিনের কাজ চাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা বিডিও-দের কাছে জমা করা হয় এবং নতুন করে সার্ভের মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় নাম তোলার যে কাজ চলেছ তাতেও যোগ্য মানুষদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এখনও চলছে।

সিপিআই(এমএল) জেলা সম্পাদক সলিল দত্ত এবং আয়ারলার রাজ্য সভাপতি সজল পাল ছাড়াও ডেপুটেশনগুলিতে স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রফিকুল ইসলাম ও হরেকৃষ্ণ ঘোষ (কালনার ডেপুটেশনে), আনাসারুল মণ্ডল, মনসুর মণ্ডল ও অন্যান্যরা (মন্তেশ্বরের ডেপুটেশনে) এবং শিবু সাঁতরা, বিনয় মণ্ডল, অশোক চৌধুরি ও অন্যান্যরা (পূর্বস্থলীর ডেপুটেশনে)। তৃণমূলের চালানো সন্ত্রাসের পরিস্থিতিতে ডেপুটেশনগুলো জনগণের মধ্যে ভালো সাড়া জাগায়।

খণ্ড-25
সংখ্যা-29